সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সুস্থ থাকতে খেতে পারেন ফিশ অয়েল বা Omega 3 ক্যাপসুল

 

বাঙালি আর মাছ খান না, এরকম দৃষ্টান্ত খুব কম দেখতে পাওয়া যায়। মাছে-ভাতে বাঙালি – এই কথাটার প্রচলন তো আর এমনি এমনি হয়নি! তবে শুধু বাঙালিরাই নন, অনেক অবাঙালিরাও মাছের ভক্ত। শুধুমাত্র স্বাদের জন্য নয়, মাছের মধ্যে রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ, যা শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তবে মাছের তেল বা ফিশ অয়েলও (Fish Oil) যে নানা ওষধি গুণে পূর্ণ।


ফিশ অয়েল ব্যাপারটা কী?

ফিশ অয়েল মাছের টিসু থেকে তৈরি হয়। ফিশ অয়েলে (Fish Oil) omega 3, ফ্যাটি অ্যাসিড, Eicosapentaenoic Acid এবং Docosahexaenoic Acid রয়েছে। তবে যেহেতু Omega 3-এর পরিমাণ সর্বাধিক, কাজেই ফিশ অয়েলকে Omega 3 Oil-ও বলা হয়। বাজারে যে omega 3 oil পাওয়া যায়, সেগুলি কিন্তু ফিশ অয়েল।


ফিশ অয়েলের পুষ্টিগত ভ্যালু এক ঝলকে দেখে নিন বরং –


এক চা চামচ ফিশ অয়েলে যা যা থাকে


ক্যালোরি – ৬


ফ্যাট – ৫ গ্রাম


সোডিয়াম – ০ মিগ্রা


ফাইবার – ০ গ্রাম


শর্করা – ০ গ্রাম


প্রোটিন – ০ গ্রাম


ভিটামিন ডি – ৯ ডি ভি


ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড – ১০৮৪ মিগ্রা


ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড – ৬ মিগ্রা


বিশেষ দ্রষ্টব্য: মাছের প্রজাতির উপরে অবশ্য এই পুষ্টিগত পরিমাপগুলির তারতম্য হতে পারে।



সুস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ফিশ অয়েলের ভূমিকা

ফিশ অয়েল (Fish Oil) স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। হার্ট সুস্থ রাখা থেকে শুরু করে শিশুর বিকাশ, ওজন কমানো থেকে শুরু করে অবসাদ কাটানো – নানাভাবে আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে ফিশ অয়েল ব্যবহার করা হয়। তাঁরই কয়েকটি দেখে নেওয়া যাক




১। হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে


ফিশ অয়েল কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। সঙ্গে এও নিশ্চিত করে যে কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করবে। আসলে, ফিশ অয়েল ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমায়, যা কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। Omega 3 ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে হৃদরোগের আশঙ্কা কমাতে  এবং হার্টে কোনও ব্লক থাকলে তা নিরাময় করতে সহায়তা করে।


২। প্রস্টেট ক্যান্সার নিরাময়ে সাহায্য করে


ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতী রোগ প্রতিরোধ করতে নিয়ম করে ফিশ অয়েল (Fish Oil) খাওয়া জরুরি। Omega 3 ফ্যাটি অ্যাসিড হওয়ায় এটি আপনার দেহের স্বাভাবিক এবং স্বাস্থ্যকর কোষবিভাজনে সাহায্য করে। নিয়মিত ফিশ অয়েল খেলে (ক্যাপসুল) স্তন, কোলন এবং প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সহজ হয়ে ওঠে।


৩। মানসিক বিকাশে সাহায্য করে


শরীর সুস্থ রাখতে আমরা অনেক কিছুই করি। ব্যায়াম থেকে শুরু করে নানারকমের শরীরচর্চা, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন – সব কিছুই। তবে মানসিক স্বাস্থ্যকে আমরা খুব বেশি গুরুত্ব দিই না। ফলে অনেকসময়ে মানসিক বিকাশ ঠিকমত হয় না। আবার মানসিক সমস্যাও যেমন স্ট্রেস, অ্যাংজাইটি ইত্যাদির সমস্যাও দেখা যায়। এই সব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অথবা এই সব সমস্যা যাতে না হয় সেজন্য নিয়ম করে ফিশ অয়েল (Fish Oil) খাওয়াটা জরুরি। ফিশ অয়েলে যেহেতু Omega 3 রয়েছে কাজেই স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতেও কিন্তু ফিশ অয়েল দারুণ উপকারী।


৪। ফারটিলিটি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে


পুরুষদের ফারটিলিটি বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে কিন্তু ফিশ অয়েল খুব উপকারী। Omega 3  শুক্রাণু বৃদ্ধিতে সাহায্য করে যা পুরুষদের ফারটিলিটি বাড়াতে খুবই সহায়ক। শুধুমাত্র পুরুষদেরই না, ফিশ অয়েল নারিদের ফারটিলিটি বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে।


৫। গর্ভাবস্থায় ফিশ অয়েলের উপকারিতা


গর্ভাবস্থায় অনেক ডাক্তার হবু মা-কে ফিশ অয়েল ক্যাপসুল খাওয়ার পরামর্শ দেন। এর মধ্যে যেহেতু omega 3 ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, কাজেই বুঝতেই পারছেন শিশুর বিকাশে তা কতটা উপকারী। শিশুর মস্তিকের বিকাশেই যে ফিশ অয়েল কাজে কাগ তা নয়, শিশুর চোখের বিকাশেও কিন্তু ফিশ অয়েলের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া গর্ভাবস্থায় ফিশ অয়েল খেলে প্রি-ম্যাচিওর ডেলিভারি এবং অন্যান্য ঝুঁকি রোধ করতে সাহায্য করে ফিশ অয়েল।


৬। মধুমেহ কমাতে সাহায্য করে


ইদানিং আমাদের জীবনে রোগের প্রকোপ এত বেড়ে গিয়েছে যে আমরা সবাই খুবই জর্জরিত। তবে বেশিরভাগ রোগই কিন্তু আমাদের অনিয়মিত জীবনযাত্রার ফলাফল। মধুমেহ বা ডায়াবেটিসও ঠিক সেরকমই একটি সমস্যা। রক্তে যখন ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যায়, তখন এই রোগটি সৃষ্টি হয়। অনেক বৈজ্ঞানিক মনে করেন যে ফিশ অয়েলে (Fish Oil) উপস্থিত omega 3 রক্তে ইনসুলিনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং ফলে মধুমেহ রোগের প্রকোপ থেকে বাঁচার সম্ভাবনাও তৈরি হয়।


৭। অ্যালজাইমারের জন্য ভাল


একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অনুযায়ী ফিশ অয়েলে মজুত ফ্যাটি অ্যাসিড অ্যালজাইমার রোগের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয়। অ্যালজাইমার হল এমন একটি রোগ যেখানে একটা সময় বা বয়সের পর এই রোগে আক্রান্ত রোগী সব ভুলে যেতে শুরু করেন। আপনি কি জানেন যে ফিশ অয়েলে রয়েছে ইপিএ এবং ডিএইচএ? সে সঙ্গে রয়েছে  প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড, যা অ্যালজাইমার রোগের চিকিৎসায় সহায়তা করে। অন্যান্য গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে ফিশ অয়েল অ্যালজাইমার রোগে আক্রান্ত  রোগীদের জন্য উপকারী।


৮। বাতের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে


আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা বাতের ব্যথায় ভুগছেন। আর বাতের ব্যথায় যারা আক্রান্ত একমাত্র তাঁরাই জানেন যে এই যন্ত্রণা কতখানি কষ্টদায়ক। ফিশ অয়েল কিন্তু বাতের ব্যাথা, বিশেষ করে গাঁটেবাত কমাতে খুব সাহায্য করে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ফিশ অয়েল এবং omega 3 ইপিএর অ্যান্টি-ামেটরি বৈশিষ্ট্গুইনফ্ল্য বাতের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।


৯। হাড় মজবুত করে


ফিশ অয়েল আপনার হাড়কেও মজবুত করে। যাদের হাড় মজবুত নয়, তাঁদের অস্টিওপোরোসিস নামক এই ভয়ঙ্কর রোগটি দেখা দেয়। ফিশ অয়েল ভঙ্গুর হাড় নিরাময় করতে সহায়তা করে। নিয়মিত ফিশ অয়েল সেবনে আপনার হাড়ের ঘনত্ব বাড়ে এবং হাড় মজবুত হয়। আগেই বলেছি যে omega 3 ফ্যাটি অ্যাসিডগুলি ফিশ অয়েলে উপস্থিত রয়েছে। এই ফ্যাটি অ্যাসিড আমাদের শরীরের ভিতরের হাড়ের চারপাশের টিস্যুগুলির খনিজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে, যা হাড়কে শক্তিশালী করে তোলে


১০। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়


আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যাঁদের একটুটেই সর্দি-কাশি হয় বা কোনও না কোনও অসুখে তাঁরা ভুগতেই থাকেন। এমনটা হয়, তার কারণ হল তাঁদের শরীরে রোগপ্রতিরোধ করার ক্ষমতা খুব কম থাকে। ফিশ অয়েল (Fish Oil) কিন্তু আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। Omega 3 আমাদের শরীরে অটোইমিউন ডিজঅর্ডার কমায় এবং সঙ্গে খারাপ ফ্যাট দূর করে।


১১। হাপানি নিরাময় করতে সাহায্য করে


হাঁপানি একটি ফুসফুসের ব্যাধি যা ফুসফুসে প্রদাহ এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা সৃষ্টি করে। অনেক বিশেষজ্ঞমনে করেন, হাঁপানি শুরু হওয়ার সময় থেকেই যদি ফিশ অয়েল খাওয়া যায় তাহলে হাপানি বাড়ার সুযোগ পায় না এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যাও হয় না। এছাড়াও, গর্ভবতী মহিলাদের ডায়েটে ফিশ অয়েল যোগ করার পরামর্শ অনেক ডাক্তার দিয়ে থাকেন যাতে ভ্রূণের অ্যালার্জির ঝুঁকি হ্রাস করে।


১২। অবসাদ কাটাতে সাহায্য করে


মানসিক অবসাদ কাটাতে কিন্তু ফিশ অয়েল খুব উপকারী। এতে omega 3 রয়েছে, যা মেজাজ ফুরফুরে রাখতে সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরে হ্যাপি হরমোন নিঃসরণ করে, ফলে হতাশা, মানসিক চাপ, অ্যাংজাইটি ইত্যাদি হ্রাস পায়।  


১৩। হাত-পা ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে


অনেকসময়ে আমাদের হাত পা ফুলে যায়। কখনও কেটে ছড়ে গেলে অথবা অনেকসময়ে অন্যান্য নানা কারণে হাতে-পায়ে ফোলাভাব দেখা যায়। আমাদের শরীরে নানা সংক্রমণ বা ঘা-এর ফলে এই ফোলাভাব দেখা যায়। অনেক সময়ে এই ফোলাভাব বেশ অনেকদিন পর্যন্ত থাকে, তখন হয় সমস্যা। অতিরিক্ত ওজন, মধুমেহ, হার্টের সমস্যা – এই ধরনের শারীরিক সমস্যাগুলো বেড়ে যায় এই সময়ে। কাজেই, ফিশ অয়েল যদি নিয়মিত খাওয়া যায় তাহলে হাত-পা ফোলা কমবে এবং সঙ্গে এই লাইফস্টাইল ডিজিজ থেকেও মুক্তি পাবেন।


১৪। এডস-এর জন্য ভাল ওষুধ


গবেষণায় দেখা গেছে যে ফিশ অয়েল এডস-এর মতো মারনরোগ কমাতেও উপকারী। তবে গবেষণা এখনও চলছে বলেই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


১৫। ভ্রুনের বিকাশে সাহায্য করে


ফিশ অয়েলের মধ্যে থাকা omega 3 ফ্যাটি অ্যাসিড ভ্রূণের বিকাশেও সাহায্য করে। গর্ভজাত শিশুর মানসিক বিকাশে এবং চোখের বিকাশে omega 3-এর ভূমিকা অতুলনীয়।


১৬। ওজন কমাতে সাহায্য করে


অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় আমরা অনেকেই ভুগি। নানা ডায়েট করে হোক বা অন্য যে-কোনও উপায়ে আমরা শরীরের অতিরিক্ত মেদ ও ওজন থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টাও করে থাকি। ফিশ অয়েল ওজন কমাতেও সহায়তা করে। ডিএইচএ এবং ইপিএ এর মতো উপাদানগুলি মহিলাদের নিখুঁত শারীরিক আকার বজায় রাখতে এবং পুরুষদের বর্ধিত ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। গবেষণা অনুসারে, প্রতিদিন 6 গ্রাম ফিশ তেল খাওয়া শরীরের অতিরিক্ত মেদ হ্রাস করতে সহায়তা করে।


ত্বকের জন্য ফিশ অয়েল কতটা উপকারী?


এ তো নাহয় গেল ফিশ অয়েল আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী সে বিষয়ে আলোচনা, তবে ফিশ অয়েল কিন্তু আমাদের ত্বকের জন্যও খুব উপকারী (Benefits)। ত্বকের যত্নে এবং সৌন্দর্য বাড়াতে ফিশ অয়েল ঠিক কী কী ভূমিকা পালন করে, চলুন দেখে নেওয়া যাক।


১। ত্বকের জ্বালা-পোড়া কমায়


ফিশ অয়েলে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ এবং অন্যান্য সম্পর্কিত রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে। এছাড়া ফিশ অয়েলে মজুত omega 3 সারাদিনের ধকল কমাতেও সাহায্য করে। ধকল বা স্ট্রেস থেকেও কিন্তু আমাদের ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয়। কাজেই নিয়মিত ফিস অয়েল বা omega 3 যুক্ত ক্যাপসুল খেলে কিন্তু ত্বকের অনেক অবাঞ্ছিত সমস্যা থেকেই মুক্তি পাওয়া যায়।


২। ব্রণ ফুসকুড়ি কমাতে সাহায্য করে


যারা ব্রণ-ফুসকুড়ি বা অ্যাকনের সমস্যায় ভোগেন, তাঁরা কিন্তু নিয়মিত ফিশ অয়েল খেতে পারেন। যদি আপনি মাছ না খান, তাহলে তার পরিবর্তেও ফিশ অয়েল বা omega 3 ক্যাপসুল অবশ্যই খান। ত্বকের লাবন্য ধরে রাখতে ফিশ অয়েলে মজুত ডিএইচএ এবং ইপিএ সাহায্য করে।


৩। চোখের জন্য ভাল


বৃদ্ধ বয়সে চোখের জ্যোতি কমে যাওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু অনেকেরই ছোটবেলা থেকেই চোখের সমস্যা থাকে; তাঁদেরকে নিয়মিত ফিশ অয়েল বা omega 3 ক্যাপসুল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। Omega 3 চোখের জ্যোতি শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে।


৪। ইউভি রশ্মি থেকে রক্ষা করে


সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মির হাত থেকে ত্বক রক্ষা করতে ফিশ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। শুধু omega 3-ই নয়, এই তেলটিতে ভিটামিন ডি-ও রয়েছে।


চুলের যত্নে ফিশ অয়েল


চুলের নানা সমস্যা সমাধান করতেও ফিশ অয়েল উপকারী (Benefits)। আসুন দেখি কীভাবে ফিশ অয়েল চুলের জন্য কাজ করে।


১। চুল পড়া কমায়


চুলের গোড়ায় পুষ্টির অভাব হলে তখনই চুলের গোড়া আলগা হয়ে যায় এবং চুল পড়তে শুরু করে। অনেকসময়ে কিন্তু আবার শুধু যত্নের অভাবে নয়, শারীরিক নানা সমস্যা থেকেও চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। চুল পড়ার সমস্যায় যদি আপনিও জর্জরিত হন তাহলে নিয়ম করে নিজের খাদ্যাভ্যাসে ফিশ অয়েল যোগ করুন। এর মধ্যে থাকা omega 3 চুলের গভীরে গিয়ে পুষ্টি যোগায় এবং চুলকে ভিতর থেকে মজবুত করে তোলে।


২। চুলের নানা উপাচারে কাজে লাগে


মাথার তালুতে আমরা আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য নারকেল তেল, টি-ট্রি অয়েল, অলিভ অয়েল ইত্যাদি ব্যবহার করি। তবে ফিশ অয়েল কিন্তু সেভাবে ব্যবহার করা হয় না। যদি আপনি ভাবেন যে omega 3 ক্যাপসুল অন্য কোনও তেলের সঙ্গে মিশিয়ে বা ফিশ অয়েলের সঙ্গে অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে হেয়ার প্যাক হিসেবে ব্যবহার করবেন, তাহলে তা ভুলে যান; কারণ ফিশ অয়েলের গন্ধ খুবই উগ্র হয়। কাজেই চুলকে ভাল পুষ্টি দিতে নিয়মিত ফিশ অয়েল খান।


৩। নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে


অনেকেরই লম্বা চুলের শখ থাকে কিন্তু কোনও কারণে কিছুতেই চুল লম্বা হয় না। এর মূল কারণ হল চুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি যাচ্ছে না। ফিশ অয়েলে চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টি উপাদান থাকে। তাই খেয়াল করে দেখবেন যারা ছোটবেলায় বাড়িতে মাছ খাওয়ার উপরে, বিশেষ করে মাছের তেল খাওয়ার উপরে খুব জোর দেওয়া হতো। ফিশ অয়েল চুলের গোড়ায় যথাযথ পুষ্টি এবং প্রোটিন প্রদান করে, ফলে চুল দ্রুত লম্বা হয় এবং চুলে একটা আলাদা শাইনও দেখা যায়।  


৪। মাসাজ অয়েল হিসেবে ব্যবহার করা যায়


যদি আপনি মাছ না খান সেক্ষেত্রে অবশ্য চুলের গোড়ায় গোড়ায় ফিশ অয়েল মাসাজ করতে পারেন। উগ্র গন্ধ দূর করতে লেবুর রস এবং অন্যান্য কোনও সুগন্ধি তেল মেশাতে পারেন।


ফিশ অয়েলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া


ফিশ অয়েলের যেমন এত উপকারিতা (Benefits) রয়েছে, ঠিক সেরকমই কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। অনেকেরই নানারকম মাছে অ্যালারজি থাকে, বিশেষ করে ইলিশ, চিংড়ি বা সামুদ্রিক মাছে। তাঁরা যদি ফিশ অয়েল ক্যাপসুল খেতে চান, সেক্ষেত্রে সবার আগে ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়াটা শ্রেয়। এছাড়াও অনেকসময়ে প্রথমদিকে একটু বমিভাব বা ঘামে দুর্গন্ধ হতে পারে ফিশ অয়েল খাওয়া শুরু করলে।


ফিশ অয়েল সংক্রান্ত আরও কিছু প্রশ্নোত্তর


১। কীভাবে ফিশ অয়েল ব্যবহার করা উচিত


বাঙালিরা মাছ, মাছের তেল এবং মাছ দিয়ে তৈরি যে-কোনও খাবারই আনন্দ করে খান। তবে অনেকে আছেন যারা মাছের গন্ধ সহ্য করতে পারেন না, তাঁরা কিন্তু ফিশ অয়েল ক্যাপসুল খেতে পারেন। একই কাজ হয়।


২। সারাদিনে কতটা ফিশ অয়েল খেতে পারি


একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ সারাদিনে ১১০-১২০ মিগ্রা ফিশ অয়েল খেতে পারেন। তবে যদি কোনও রকম শারীরিক সমস্যা থেকে থাকে, সেখত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তবেই ফিশ অয়েল খান।


৩। কখন ফিশ অয়েল খাওয়া উচিত


আপনি প্রতিদিনই ফিশ অয়েল খেতে পারেন, তবে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়েই ফিশ অয়েল খাবেন। অনেক বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দেন, দুপুরে খাওয়ার সময়ে ফিশ অয়েল ক্যাপসুল খাওয়ার।


৪। কখন ফিশ অয়েল খাওয়া উচিত নয়?


আপনি পরিমাণমতো ফিশ অয়েল প্রতিদিনই খেতে পারেন, তবে যদি আপনি খুব বেশি পরিমাণে কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার খান বা মদ্যপান করেন সেক্ষেত্রে কিন্তু ফিশ অয়েল কোনও উপকারেই (Benefits) লাগবে না।


৫। শিশুদের কতটা ফিশ অয়েল দেওয়া উচিত?


চার থেকে আট বছরের বাচ্চাদেরকে আপনি ফিশ অয়েল দিতে পারেন তবে চার বছরের ছোট শিশুকে ফিশ অয়েল ক্যাপসুল না খাইয়ে মাছ খাওয়ান। আট বছর পর্যন্ত বাচ্চাকে সারাদিনে ৯০ মিগ্রা ফিশ অয়েল খাওয়াতে পারেন।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মিনোক্সিডিল এর সাতসতের

আমাদের মাঝে অনেকেরই দিন দিন চুল পড়ে পাতলা হয়ে যাচ্ছে।ছেলেমেয়ে উভয়েই এ সমস্যার সম্মুখীন।আবার এখনকার বেশির ভাগ তরুণের মুখে একটি প্রশ্ন বয়স ত অনেক হল কিন্তু দাড়ি হচ্ছেন কেন? আজকে আমরা কয়েটা প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো।প্রশ্নগুলো হল:- চুল পড়ার কারণ কি? চুল পড়া বন্ধের উপায় কি? চুল পড়া কমানোর উপায় কি? চুল পড়া বন্ধের ওষুধ এর নাম কি? চুল পড়া বন্ধের শ্যাম্পু আছে কি? চাপ দাড়ি না গজানোর কারণ কি? কিভাবে মুখে দাঁড়ি উঠানো সম্ভব? দাড়ি গজানোর ওষুধ আছে কি? দাড়ি গজানোর ক্রিম এর নাম কি? চুল পড়ার করণ গুলো হল :- জিনগত বা বংশগত,অতিরিক্ত খুশকি,অতিরিক্ত শ্যাম্পু করা,কেমোথেরাপি,ব্যাক্টেরিয়া বা ছত্রাক,অতিরিক্ত ডায়েট কন্ট্রোল,ডায়াবেটিকস,হজমে সমস্যা,রক্ত সল্পতা ইত্যাদি। চাপ দাড়ি না গজানোর কারণ হল :- জিনগত বা বংশগত এবং পরুষ হরমুন টেস্টটেরন নিঃসৃত না হওয়া। বাকি প্রশ্নগুলোর উত্তর একটাই ক্লিকল্যান্ড মিনোক্সিডিল। মিনোক্সিডিল ৫ কী? মিনোক্সিডিল 5 একটি মেডিসিন যা চুল বা দাড়ি গজাতে সাহায্য করে।এছাড়াও হালকা চুল ঘন করে এবং চুল পড়া বন্ধের উপায় হিসেবে এটি ব্যাবহার

Buy Zafran Hair Growth Therapy (150ml) Bangladesh

প্রডাক্টের নামঃ- Zafran Hair Growth Therapy (150ml) আপনার কি মাথার টাক? -প্রতিদিন চুল পড়ে মাথা খালি  হয়ে যাচ্ছে? -চুলের গোড়া একদম নরম? -চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে ? -মাথায় খুসকি সমস্যা? অর্ডার করতে বা যেকোনো প্রয়োজনে কল করুন 📞 01855000033 বর্তমান মূল্যঃ- 800 প্রডাক্টের উপকারীতাঃ- ১.৩ দিনে চুল পরে যাওয়া একদম বন্ধ করে। ২.১ মাস নিয়মিত ব্যবহারে ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত চুল লম্বা করে। ৩.২ মাস নিয়মিত ব্যবহারে নতুন চুল গজায়। জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি তৈরি হয়েছে জাফরানের নির্জাস সহ আরো ১০টির বেশী অসাধারণ ও দুর্লভ হারবাল উপাদান দিয়ে। এর অনন্য ফর্মুলার কারনে খুব দ্রুত ও সহজেই উপাদেয় উপাদান গুলো চুল ও চুলের গোরায় ঢুকে চুল ও স্ক্যাল্প এর প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায়। আমাদের চুল মুলত কেরাটিন দিয়ে গঠিত। এটি এমিনো এসিড দিয়ে তৈরি একধরনের প্রোটিন। জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি চুলে পর্যাপ্ত এমিনো এসিড সরবরাহ করে ও ফলিকল উদ্দিপিত করে যা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। এর ভেষজ উপাদানে আরো আছে আয়রন ও জিংক যা স্ক্যাল্পে অক্সিজেন প্রবাহিত করে আর নতুন টিসু তৈরি করে ও চুল পরে যাওয়া বন্ধ করে চুলকে দ

ক্যাস্টর অয়েল কি?

চুল আমাদের সৌন্দর্যের অনেক বড় একটা অংশ বহন করে। সেই চুলই যদি ক্রমাগত ঝরে গিয়ে মাথায় টাকের সৃষ্টি করে তাহলে কী আর দুঃখের সীমা থাকে! তাই চুল পড়া নিয়ে আমাদের চিন্তার অন্ত নেই। আজকের দিনে আমরা মোটামুটি সবাই এই সমস্যায় ভুগছি। চুল পড়ার নানান কারণ থাকতে পারে- এর মধ্যে রয়েছে দুশ্চিন্তা, অপর্যাপ্ত ঘুম, অতিরিক্ত কাজের চাপ, অসুস্থতা, বংশগত সমস্যা, পরিবেশের প্রভাব ইত্যাদি। এ সকল সমস্যা থেকে পরিত্রাণের জন্য ক্যাস্টর অয়েল হতে পরে অনন্য একটি উপায়। ক্যাস্টর অয়েল কি? ক্যাস্টর অয়েল, এই নামটি অনেকেই হয়তো শুনে থাকবেন। তবে বাস্তবতা হলো, এর প্রকৃত গুনাগুণ সম্পর্কে আমরা হয়তো খুব কমই জানি। তবে চলুন জেনে নিই এই তেলে কি রয়েছে। ক্যাস্টর অয়েলে রয়েছে ভিটামিন ই, মিনরেলস, প্রোটিন, এসেন্সিয়াল ফ্যাটি এসিড যা চুল পড়া রোধ করার সাথে সাথে নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। এটি চুলের যাবতীয় সমস্যা দূর করে এর স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনে।ক্যাস্টর অয়েল স্ক্যাল্পে ভালো মতো ম্যাসাজ করলে এটি স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়। স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন যত বাড়বে এর অবস্থা তত উন্নত হবে এবং হেয়ার ফলিকলগুলো আরও সুস্থ